সরকার গড়ার দাবি নিয়ে রাজ্যপালের দারস্থ বিরোধীরা, তৈরি নয়া অঙ্ক


ওয়েব সংবাদ : কর্নাটকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিরোধীদের কাছে পৃথক দরজা খুলে দিল। আর তাতেই উৎসাহিত হয়ে গোয়া, বিহার এবং মণিপুরে বিরোধীরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন। নেপথ্যে সূত্রটি হল সিঙ্গল লার্জেস্ট পার্টি বা একক বৃহত্তম দল। শুক্রবার গোয়ার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চিল্লা কুমার সহ–১৩ জন নেতা রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহার সঙ্গে দেখা করে সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছেন। এমনকী তাঁরা যে এখানে একক বৃহত্তম দল তা স্মারকলিপি দিয়ে জানিয়ে এসেছেন। এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেখাবেন তাঁরা। কর্নাটকে যদি একক বৃহত্তম দল হিসাবে বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে যেখানে কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল তাঁদের কেন সুযোগ দেওয়া হবে না বলে রাজ্যপালকে জানিয়েছেন কংগ্রেস মুখপাত্র জ্যোতিষ নায়েক। অন্যদিকে কর্নাটকের ফল ও তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ দেখে এবার বিহারেও সরকার গড়ার দাবি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করল আরজেডি। 
লালুপুত্র তথা প্রাক্তন উপ–মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, ‘‌কর্নাটকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়েও যদি বিজেপি সরকার গড়তে পারে তাহলে আমরাও তা করতে পারি বিহারে। শুক্রবার দুপুরে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে দেখা করেন আরজেডির বিধায়করা। কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু। ২২৪ আসনের এই বিধানসভায় ভোটগ্রহণ হয়েছে ২২২টি আসনে। তার মধ্যে ১০৪টি আসন পেয়ে বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। কিন্তু ১১২টি আসনের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেনি তারা। কংগ্রেস পেয়েছে ৭৮টি আসন। আর সরকার গড়ার পক্ষে যে দল সে রাজ্যে কিং মেকারের কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছিল সেই জেডি(এস) পেয়েছে ৩৮টি আসন। তাই আমাদের সুযোগ দেওয়া হলে আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেবো। আমাদের ১১১টি বিধায়ক রয়েছেই। আর কিছু বিক্ষুব্ধ জেডি(‌ইউ)‌ বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেওয়া যাবে। তাঁরা নীতীশ কুমারের মত ঘুরে যাবে না।’‌ কে সরকার গড়বে, এই প্রশ্নে যখন জল্পনা চরমে উঠেছে, ঠিক তখনই একক বৃহত্তম দল হিসেবে বিজেপিকে সরকার গড়তে আহ্বান জানান কর্নাটকের রাজ্যপাল বাজুভাই বালা। আর এখন এই রাস্তাই বুমেরাং হয়েছে বিজেপির কাছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। 
 তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি, নীতীশ কুমারের দল জনতা দল ইউনাইটেড এবং কংগ্রেস একজোট হয়ে বিজেপিকে পরাস্ত করেছিল। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় ১৫১টি আসন পায় মহাজোট। আর বিজেপি পায় ৫৩টি আসন। কংগ্রেসের দখলে ছিল ২৭টি আসন। মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ কুমার। কিন্তু আরজেডি একাই পায় ৮০ আসন। তখন নীতীশ কুমারের দল পায় ৭১টি আসন। এরপর লালুপ্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর আরজেডির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে জোট ভাঙে নীতীশ। সেই সঙ্গে পুরানো জোটসঙ্গী বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে নতুন জোট করে সরকার গড়ে জেডিইউ। এদিন মণিপুরেও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্যপাল জগদীশ মুখীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে সরকার গঠন করার দাবি জানানো হয়েছে। কারণ তারা সেখানে একক বৃহত্তম দল। এই ঘটনাবহুল পরিস্থিতিতে কর্নাটকের ফল নতুন করে পাশা পাল্টে দিতে পারে গোয়া, মণিপুর ও মেঘালয় বিধানসভায়। তাই কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পাকে শপথগ্রহণ করিয়ে রাজ্যপাল বাজুভাই বালা এক নতুন প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: