আজও রহস্যের আবৰ্তে নেতাজির মৃত্যু


(খন্ড ১) 
  • অমল গুপ্ত 

দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু তাঁর গদীর সুরক্ষার জন্যে আপোসহীন সংগ্রামী নেতা মহান বিপ্লবী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। গত ২৩ জানুয়ারি নেতাজীর জন্মদিন থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকার নেতাজীর রহস্যজনক অন্তর্ধান সম্পর্কীয় ৩০৩টি গোপন ফাইল প্রকাশ করেছিলেন।এবারও বাকি ফাইল প্ৰকাশ করার কথা৷ পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকারও ৬৪টি ফাইল প্রকাশ করে। এই প্রকাশ অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিভিন্ন ফাইল দেখে প্রতীয়মান হয়েছে যে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়নি। 
এই গোপন ফাইলগুলির প্রায় ১৫ হাজার পৃষ্ঠার একাধিক জায়গায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেহরু নোট দিয়ে বলেছিলেন, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট জাপানের তাইহুকুতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়েছিল। নেহরু এক চিঠিতে নেতাজীকে ‘যুদ্ধ অপরাধী’ বলেও চিহ্নিত করেছিলেন। জাপানের এক অজ্ঞাত পরিচয় সেনার মৃতদেহের অস্থি জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা হয়। এই অস্থি নেতাজীর ছিল না বলেও অন্যান্য সূত্র দাবি করেছে। জাপানের সঙ্গে গোপন অভিসন্ধি করে দীর্ঘ ৪৭ বছর পর নকল মৃত্যুর প্রমাণপত্র দেশকে দেখানো হয়। ওই ছাইভষ্ম এখনও ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়নি। ডি এন এ পরীক্ষা করা হলে সব কিছু প্ৰমাণহয়ে যেতো৷ 
দেশের সব প্রধানমন্ত্রীই জাপানের রেনকোজি মন্দিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু নরেন্দ্ৰ মোদি জাপানে গেলেও মন্দিরে যাননি।অপর প্ৰধানমন্ত্ৰী অটল বিহারী বাজপেয়ী গেলেও মন্দিরের স্মারকগ্রন্থে ভস্মাধারের কথা উল্লেখই করেননি। আজাদ হিন্দ বাহিনীকে বিশ্বের ১১টি রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্টের বিমান দুর্ঘটনার কথা বলেনি। তাইওয়ান সরকারও পরে বলেছিল, দুর্ঘটনার কোনও খবর নেই। নেতাজীর বিমান সফর সঙ্গী হবিবুর রহমান বলেছিলেন, নেতাজী সম্পূর্ণ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু রহমানের সেনা পোশাকে আগুন স্পর্শই করেনি। এক পোড়া ঘড়ি দেখিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন সেটা নেতাজীর। কিন্তু বিদেশের এক ফরেন্সিক ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা যায় যে ঘড়িটি আদৌ নেতাজীর নয়। নেতাজীর পরিবার জানিয়েছিল, এধরণের চৌকো আকৃতির ঘড়ি নেতাজী পড়তেন না। হবিবুর রহমান রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে নেতাজীর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেছিলেন। 
সেই হবিবুর রহমানকে তদানীন্তন কেন্দ্রীয় সরকার তখন নানা ভাবে পুরস্কৃত করে। কয়েক হাজার পৃষ্ঠার খোসলা কমিশনের প্রতিবেদনের মৃত্যুর রহস্য সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া বা নষ্ট করে দেওয়া হয়। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রীর এক ষ্টেনোগ্রাফার গৃহ মন্ত্রণালয়ের এই দুষ্কার্যের কথা জানিয়েছিলেন। ১৯৪৫ সালের বিমান দুর্ঘটনায় বিমানটি তাইহুকো-মাঞ্চুরিয়া-সাইগনের দিকে গিয়েছিল। তখন ব্রিটেন ও রাশিয়ার মধ্যে দুটি গোপন চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নেতাজীর কিছু স্বীকারোক্তি আদায় করার জন্যে সাইবেরিয়ার জেলে নেতাজিকে বন্দী করে রাখা হয়। রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি তাদের ক্রিমিনাল আর্কাইভের নথিপত্র ঘেঁটে এমনি বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গেছে বলে আইএনএ ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য কর্ণেল জি ডি বক্সি, নেতাজী গবেষক অনুজ ধর এবং অন্যান্যরা দাবী করেছেন।
 ….. পরবৰ্তী আগামী সংখ্যায় 
ফোন: +91 9864044239

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: