কর্নাটকে নাক কাটা গেল মোদি, অমিত শাহের : ইস্তফা ইয়েড্ডির, সোমবার শপথ কুমারস্বামীর


ওয়েব সংবাদ : একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বলে ভেবেছিলেন সরকারটা তাঁদেরই হবে। দিল্লিতে বসে ছক কষছিলেন মোদি–অমিত শাহ। নিধিরাম সর্দারের মত ঢাল তরোয়াল ছাড়াই ইয়েদুরাপ্পাকে পাঠিয়েছিলেন যুদ্ধে। ইয়েদুরাপ্পারও পদের লোভে পিছন ফিরে তাকাননি। তাতে যা ফল হল তাকে দেশ হাসানো ছাড়া আর কিছু বলছে না। নিজেদের চাল ফিরে এলো বুমেরাং হয়ে। গোয়া বিহারের তত্ত্ব যে কর্নাটকে কাজ করবে না তা বুঝতে পারেননি বিজেপির সেনাপতি অমিত শাহ। কংগ্রেসও এবার হাল ছাড়েনি। গোয়া আর বিহারের মত একা লড়ার চেয়ে জোট গড়া যে রাজনীতির একটা বড় অস্ত্র সেটা পর পর দুটো নির্বাচনের পর মোক্ষম বুঝেছিলেন সোনিয়া। তাই এবার আর সময় নষ্ট করেননি। ফল পুরো ঘোষণার আগেই জেডিএসের কাছে বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন গুলাম নবি আজাদ। মুখ্যমন্ত্রীর পদটাও ছেড়ে দিয়েছিলেন সোনিয়া। 
দেবগৌড়া তো ভোটের আগেই বলেছিলেন আমরাই সরকার গড়ব। তখন ভীষণ হাসাহাসি করেছিল বিজেপি। শেষে দেবগৌড়ার সেই কথাই সত্যি হল। ক্ষমতা দখলে রাখতে কংগ্রেসকে জেডিএসের হাত ধরতেই হল। রাজনীতিকদের দাবি কর্নাটক গেরুয়া রাজনীতির বাড়াবাড়িতে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল। মাত্র ৫৩ ঘণ্টা স্থায়ী হল কর্নাটকের বিজেপি সরকার। আস্থা অর্জন করতে পারবে না জেনেই প্রকাশ্যে সেকথা স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন বিজেপির শিবরাত্রির সলতে ইয়েদুরাপ্পা। এতে যত না ক্ষতি হল ইয়েদুর তার থেকে অনেক বেশি ক্ষতি হল মোদি, শাহের। কারণ, বিজেপির যাওয়ার শুরুটা বোধহয় এখান থেকেই শুরু হচ্ছে।
বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগেও বিজেপি দাবি করছিল ১১২ জন বিধায়কের সমর্থন তারা নিশ্চিত করতে পেরেছে। যদিও বিধানসভার অধিবেশনের শুরু থেকেই দু’পক্ষের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে বিপরীত ছবি ধরা পড়ছিল। বিধানসভার গ্যালারিতে যখন গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খাড়গে, অশোক গহলৌতের মতো কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতাদের খোশ মেজাজে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে, তখন ইয়েদুরাপ্পা-সহ বিজেপি বিধায়কদের মুখ ছিল যথেষ্টই ম্লান। বিধানসভায় ভাষণ দিতে উঠে ইয়েদুরাপ্পা বলেন, কর্নাটকের মানুষের রায় আমাদের দিকে ছিল। কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট হেরেছে এই নির্বাচনে। কিন্তু তার আগেই বিজেপি বুঝে গিয়েছিল আস্থা ভোটে জেতার সংখ্যা কোনও ভাবেই ‘কিনে ফেলা’ যায়নি। ফলে আস্থাভোটে হার নিশ্চিত বুঝে ইস্তফা দিয়ে দেন ইয়েদুরাপ্পা। 
বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সোজা রাজভবনে চলে যান রাজ্যপাল বজুভাই বালার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিতে। ইয়েদুরাপ্পার ইস্তফা প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর জানান, গণতন্ত্রেকে সম্মান জানিয়েছেন তিনি। কর্নাটকে শেষমেশ কংগ্রেস-জেডি(এস) জোটের জয় হল। এই জয়ে খুশি এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি টুইট করেন, গণতন্ত্রের জয় হল। অভিনন্দন কর্নাটক। পাশাপাশি তিনি অভিনন্দন জানান, এইচ ডি দেবগৌড়া, কুমারস্বামীকেও। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের দু’দিনের মাথাতেই ইয়েদুরাপ্পাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পরীক্ষায় নামতে হয়েছিল শনিবার। কিন্তু শেষমেশ হাল ছেড়ে দিয়ে রণে ভঙ্গ দেয় তারা। আস্থাভোটের আগে এ দিন সকাল থেকেই ছিল টানটান উত্তেজনা। 
আস্থাভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে ছবিটা একেবারে বদলে যায়। আরও একটা অডিও টেপ ‘ফাঁস’ করে হইচই ফেলে দেয় কংগ্রেস। কংগ্রেস দাবি করে, তাঁদের বিধায়ক বিসি পাতিলকে টেলিফোনে মন্ত্রিত্বের টোপ দিয়ে কিনতে চেয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। যদিও বিজেপি সেই দাবিকে সম্পূর্ণ নস্যাত্ করে। শুধু অডিও টেপ প্রকাশই নয়, দুই বিধায়কের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার বিষয়টিও সামনে আনে কংগ্রেস। তারা দাবি করে, দুই বিধায়ক আনন্দ সিংহ এবং প্রতাপ গৌড়া পাতিল ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগের আঙুল ওঠে বিজেপির দিকেই। কংগ্রেস অভিযোগ তোলে, তাদের কয়েক জন বিধায়ককে অপহরণ করেছিল বিজেপি।

SHARE THIS

No. 1 Web Media in North-East India. Maintained and Published by Saiyad Bulbul Jamanur Hoque on behalf of Save Media Solution (A unit of SAVE).

0 comments: